সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:::
কক্সবাজার জেলার ২য় বানজ্যিক কেন্দ্র ঈদগাঁও বাজারে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত বাজার পরিচালনা কমিটি নেই। যার ফলে বাজার কেন্দ্রীক উন্নয়ন কর্মকান্ড বন্ধ রয়েছে। বেড়েই চলেছে অপরাধ প্রবনতা,প্রতিনিয়ত চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং, মারামারিসহ নানাবিধ সমস্যার গ্যাড়াকলে বন্দি থাকায় উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় ব্যবসাÑ বানিজ্য চালিয়ে আসছে সাধারন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে বাজারে করুন অবস্থা দেখে অনেকেই মুখ ফিরিয়ে অন্যত্রে গিয়ে বানিজ্য চালাচ্ছে। শক্তিশালী বাজার পরিচালনা কমিটি না থাকায় ভিন্ন মত পোষন করে দ্রুত সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবী জানান সকলস্থরে ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে যানজট যেন নিত্যদিনের সাথী হয়েছে সাধারন মানুষের পাশাপাশি কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদের। চেইন্ড অব কমান্ড মানছেনা বর্তমান কমিটির নেতারা। যার কারনে তাদের নির্দ্দেশও মানছেনা বাজার ব্যবসায়ীরা। যতসব বজ্য,আবর্জনা রাস্তার উপর স্তুপ, ফুটপাট দখল,পন্য পরিবহনের সময় না মানা ,অবৈধ দখল বানিজ্য, অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ীর সংখ্যা,নকল ভেজাল পন্য, মনিটরিং, পন্যের মূল্য তালিকা না থাকা অনুমোদনহীন পন্য বেচা বিক্রি, সড়ক দখল করে রিক্সা, সিএনজি, মাহিন্দ্রারা, ছারপোকাসহ হরেক রকমের গাড়ি পাকিং। শক্তিশালী কিংবা নির্বাচিত কমিটি না হওয়ায় কেউ পাত্তা দিচ্ছে না বলে জানান অনেক ব্যবসায়ী। অনুুসন্ধানে জানা যায় ,সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাক্ষী ও ঐতিহ্যের ধারক বাহক ঈদগাহ এ বাজার, প্রাচীনকাল থেকে এই বাজার সম্পদ ও পরিচয় বহন করে আসচ্ছে। ভৌগোলিক অবস্থান আর্থ সামাজিক, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, শিক্ষা-সংস্কৃতি অর্থনৈতিক অগ্রসরতা বিবেচনায় জেলার জনগুরুত্ব এলাকা ঈদগাঁও। আর বিশাল এ এলাকাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বাজারটি। নদী নির্ভর বানিজ্য প্রসারে ফুলেশ্বরী নদীর তীরে বিস্তৃত হয় গ্রামীন এ হাটটি।
কয়েকজন ব্যবসায়ী সাথে আলাপ কালে জানা যায়, অগ্নি নিরাপত্তা, পয়:নিষ্কাষন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন, নিরাপত্তা সড়ক বাতি, ন্যায্য টোল ব্যবস্থাপনা, ফুটপাট নির্মান, গনশৌচাগার শ্রমিক কর্মজীবিদের বিশ্রামাগার, আভ্যন্তরিন পরিবহন স্টেশন ও পাকিং, অবৈধ সাইন- বিল বোর্ড, ব্যানার অপসারন ও নিয়ন্ত্রণ, ক্লোজড সার্ভিস ক্যামেরা বসানোর পরেও সুবিধাজনক স্থানে কন্ট্রোল রুম বসাতে না পারাসহ সর্বোপরী ব্যবসায়ীক সেবা থেকে বঞ্চিত এ বাজারের সকলস্থরে সওদাপতিরা।
প্রাপ্ত অনুুসন্ধানে জানা যায়, বাজার পরিচালনা কমিটির সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০০৫ সালে। তিন বছরের জন্য নির্বাচিত এ কমিটি বেশি দুর এগোতে পারেনি। ২ বছর পর দেশে রাজনৈতিক ক্ষমতার পালা বদলে তত্ববধায়ক সরকার গঠন হলে শুরু হয় জরুরী অবস্থা । সে সময় গ্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দেয় বাজার কমিটির অনেক নেতা। বিলুপ্ত হয়ে যায় নির্বাচিত বাজার পরিচালনা কমিটি। ৬ বছর কোন কমিটি ছাড়াই চলে আসছিল বাজারটি। এ করুন অবস্থা দেখে কক্সবাজার ৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল ২০১৪ সালের দিকে ৬ মাসের জন্য একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করে দেয়। উক্ত কমিটির মেয়াদ অনেক আগে থেকে শেষ হলেও অধ্যবদি নির্বাচনের কোন আভাস নেই। বরং যে যার মত করে আগের গোছাতে ব্যস্থ। চেইন অব কমান্ড মানছেনা অনেকেই। ফলে বাজার পরিচালনা করেতে গিয়ে ধারুন হিমসিম খেতে হচ্ছে কয়েক নেতার।
ঈদগাহ পৌরসভা বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সভাপতি কাফি আনোয়ার বলেন, ঈদগাঁও বাজারে নির্বাচিত পরিচালনা কমিটি বর্তমানে খুবই প্রয়োজন। তা না হলে ভবিষ্যতে বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে ব্যবসায়ীরা রাজস্ব হারাতে পারে সরকার। কমিটির সাবেক প্রচার সম্পাদক সাকলাইন মোস্তাক জানান, মোগল আমল থেকে এই ঈদগাঁও বাজার দিন দিন যে ভাবে বিস্তৃত হচ্ছে তার সঠিক নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা –পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন যথাযত তদারকি ও পরিচালনা কমিটি যা দেশের আইন ও শাসনতান্ত্রিক কাঠামো অনুসারে নির্বাচিত পরিচালনা কমিটি ছাড়া অসম্ভব। বাজারের বিরাজমান সমস্যা সমাধানের জন্য বাজার কমিটিই যথার্থ। যানজট নিরসন জলাবদ্ধতা নিরসন, পরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মান, টেকসই ড্রেনেজ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পরিবহন নেটওয়ার্ক, ফুটপাট দখল উচ্ছেদ ,ভাসমান ও প্রান্তিক ব্যবসায়ী পুর্নবাসন এবং সার্বক্ষনিক বিদ্যুৎ সরবরাহের ভুমিকা পালন করতে পারে নির্বাচিত বাজার পরিচালনা কমিটি।
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে সকল ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ আলোচনা করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন বলে জানান।
পাঠকের মতামত: